প্রাইজবন্ড পুরস্কার কিভাবে তুলবেন? How can I claim my prize bond prize?

প্রাইজবন্ড পুরস্কার কিভাবে তুলবেন? How can I claim my prize bond prize?

আমরা যারা প্রাইজবন্ড সংগ্রহ করি তাদের সবার মনেই একটি সুপ্ত বাসনা কাজ করে এই ড্র’তে বোধহয় আমার কোন নাম্বার বিজয়ী হবে। আহ কি আনন্দ আকাশে বাতাসে। আজ বিজয়ী না হলেও আমার প্রাইজবন্ড সংগ্রহ করা নিয়ে যে-সব বন্ধুরা হাসি তামাশা করে, তাদের বলতে চাই “দেখিস একদিন আমিও বিজয়ী হবো”।

প্রাইজবন্ড পুরস্কারের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ 
প্রাইজবন্ডের ড্র অনুষ্ঠিত হওয়ার দুই বছর পর্যন্ত বিজয়ীরা তাদের পুরস্কার দাবি করতে পারবেন। এই সময়ের মধ্যে দাবি না করলে, পুরস্কারের টাকা তামাদি হয়ে সরকারি কোষাগারে ফেরত যবে।
আমাদের সার্ভারে সংরক্ষিত ডাটা অ্যানালাইসিস করে আমরা দেখেছি,যে, সময়মতো পুরস্কারের দাবি না করার কারণে প্রায় ৫০% টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত যাচ্ছে। 
আবেদন করার পর মাত্র দুই মাসের মধ্যেই আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পুরস্কারের টাকা সরাসরি জমা হবে।
আরও এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রাইজবন্ডের পুরস্কারের টাকা থেকে ২০% ট্যাক্স কেটে নেওয়া হয়। অর্থাৎ, আপনি যদি এক লাখ টাকা জিতেন, তাহলে আপনি হাতে পাবেন ৮০,০০০ টাকা। এই ট্যাক্স সরকারি আয়ের একটি উৎস হিসেবে কাজ করে।

কিন্তু মুশকিল হলো পুরস্কারের টাকা কিভাবে সংগ্রহ করবো এই বিষয়ে একটি প্রশ্ন থেকেই যায়।

আজকে আমরা এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব “প্রাইজবন্ড পুরস্কারের জন্য আবেদন কিভাবে আবেদন করতে হয়?
✍ প্রবন্ধের প্রথম অংশে, আবেদন পত্র কোথায় কোথায় জমা দেয়া যাবে সেই বিষয়ে আলোচনা করা হবে?
✍ প্রবন্ধের দ্বিতীয় অংশে আলোচনা করা হবে, আবেদন করার সময় কি কি কাগজ পত্র জমা দিতে হবে?
✍ এবং প্রবন্ধের ৩য় অংশে আলোচনা করা হবে “আবেদন ফরম কিভাবে পুরুন করতে হবে”?

যারা প্রাইজবন্ডের পুরস্কার পাবেন বলে আশায় বুক বেঁধে আছেন তারা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন, কাজে লাগবে।

কোথায় আবেদন করবেন:
প্রাইজবন্ডের পুরস্কার দাবির জন্য আপনি বাংলাদেশ ব্যাংকের যেকোনো শাখায় অফিস চলাকালীন সময়ে আবেদন করতে পারেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সারাদেশে ১০টি শাখা রয়েছে:

মতিঝিল (প্রধান কার্যালয়)
সদরঘাট, ঢাকা
চট্টগ্রাম
সিলেট
রাজশাহী
খুলনা
বরিশাল
রংপুর
বগুড়া এবং ময়মনসিংহ

সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে আবেদন:
আপনি চাইলে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমেও আবেদন করতে পারেন। তবে এই পদ্ধতিতে কিছু সময় বেশি লাগতে পারে। কারণ সোনালী ব্যাংক আপনার আবেদনটি বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকই পুরস্কার ডিসবার্সমেন্টের প্রক্রিয়া শুরু করবে। সোনালী ব্যাংক আপনাকে টাকা দিতে পারবে না, তারা শুধু আবেদন গ্রহণের মাধ্যম হিসাবে কাজ করবে। আবেদন ফরমটি দেখুন সেখানে সোনালী ব্যাংকের নাম উল্লেখ করা আছে।

আবেদনের সাথে বেশ কিছু কাগজ পত্র জমা দিতে হবে। যদিও আপনার মনে হতে পারে অহেতুক কিছু কাগজ জমা দিতে হচ্ছে, তারপরও উপায় নাই গোলাম হোসেন, কাগজ আপনাকে দিতেই হবে।

বিজয়ী প্রাইজবন্ডের মূলকপি এবং সাথে একটি ফটো কপি জমা দিতে হবে। শুধুমাত্র মূল প্রাইজবন্ডের ফটোকপি বা নাম্বার দিয়ে পুরস্কার তোলা যাবে না। প্রাইজবন্ডের মূলকপি জমা দিতে হয় বলে এখানে স্কামিং বা প্রতারণার সুযোগ থাকে না।
জাতীয় পরিচয়পত্রের একটি ফটোকপি।
যে অ্যাকাউন্টে টাকা নিবেন, সেই ব্যাংকের চেকবইয়ের পাতার ফটোকপি জমা দিতে হবে।
পাসপোর্ট সাইজের ২ (দুই) কপি ছবি।
নমিনির এক কপি ছবি যা দাবিকারী কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে। ধরুন নমিনির নাম হিসাবে আপনি আপনার স্ত্রীর নাম দিলেন, তাহলে নমিনির ছবি আপনাকে সত্যায়িত করতে হবে।

✔ আরও একটি বিষয় মনে রাখতে হবে....
ব্যাংকের চেক বইয়ে যে নাম আছে, ফরমের উপর যেন সেই একই নাম হুবহু লেখা হয়।
কি ভাবছেন এখানেই শেষ? না এই সকল কাগজপত্র ১ম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তা কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে।

আবেদন ফরম কিভাবে পুরুন করবেন?
ফরম পুরুনের বর্ণনা করতে গেলে অনেক লম্বা হয়ে যাবে, তাই এই লিংকে পূরুনকৃত স্যাম্পল আবেদন ফরম দেয়া আছে। আপনি এই ফরমটি ডাউনলোড করে প্রয়োজনীয় জায়গায় কারেকশন করে আপনার জন্য রেডি করতে পারবেন।

তারপরেও যদি সমস্যা মনে হয় কমেন্টসে জানাবেন, ফরম পূরণের উপর একটি বিস্তারিত প্রবন্ধ লেখা হবে। 

৩,৯১৭ মন্তব্য (০/০) ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

Latest Blog

প্রাইজবন্ড কি নিরাপদ?

মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকি ছাড়া অন্য কোন ঝুঁকি নাই প্রাইজবন্ডে। সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত ও সমর্থিত হওয়ায়...

২৪ জুন ২০২৪ ২,০৫৮

প্রাইজবন্ডের ১১৯তম ড্র - ১৩ কোটি ৩২ লাখ টাকার পুরস্কার।

৩০শে এপ্রিল ১১৯তম ড্র'তে ৮২টি সিরিজে মোট ৩,৭৭২টি পুরস্কারের জন্য বরাদ্দ ১৩ কোটি ৩২ লক্ষ ২৫ হাজার টা...

২২ এপ্রিল ২০২৫ ২,১০২

ড্রর আগের দিন কেনা প্রাইজবন্ড কি ড্র’তে আসে?  

কার্যকর থাকলেই যে সকল প্রাইজবন্ড সকল ড্র’তে অংশ নিবে এমন নয়। আপনার কেনা প্রাইজবন্ড ড্রতে আসবে কিনা এ...

২৬ অক্টোবর ২০২৪ ২,৮৫৭

প্রাইজবন্ডের জনপ্রিয়তার পতনের কারণ?

প্রাইজবন্ড একসময় বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় বিনিয়োগের বিকল্প ছিল। এক দশক আগেও প্রাইজবন্ড উপহার ও পুরস...

২০ মে ২০২৪ ২,১৩৫

প্রাইজবন্ড পুরস্কার কিভাবে তুলবেন? How can I claim my prize...

প্রাইজবন্ডের পুরস্কার দাবির জন্য আপনি বাংলাদেশ ব্যাংকের যেকোনো শাখায় অফিস চলাকালীন সময়ে আবেদন করতে...

২৯ জানুয়ারী ২০২৫ ৩,৯১৭

প্রাইজবন্ডের ড্র কিভাবে অনুষ্ঠিত হয়?

প্রাইজবন্ডের ড্র বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে 'ড্র' কমিটি কর্তৃক পরিচালিত হয়। ড্র অনুষ্ঠ...

০৭ মে ২০২৪ ৩,০৫৫

প্যাকেজের মেয়াদ লাইফটাইম কি এবং কেন?

আমাদের প্রধান লক্ষ্য শুধু বর্তমান গ্রাহকদের উপর বার্ষিক চার্জের বোঝা চাপানো নয়, বরং একটি আকর্ষণীয়...

১৯ মে ২০২৫ ৬৬৫

প্রাইজবন্ড কোথায় ছাপানো হয়?

বাংলাদেশের প্রাইজবন্ড ঢাকার গাজীপুরে অবস্থিত সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন বাংলাদেশ লিমিটেড (এসপিসিব...

২৮ মে ২০২৪ ২,১১১

১০ বছরেও প্রাইজবন্ড পুরস্কার না পাওয়ার কারণ।

প্রাইজবন্ড কেনার মূল উদ্দেশ্য হলো অর্থ সঞ্চয় করা। পুরস্কার জেতাটা একটি কাকতালীয় ফল মাত্র।

০৮ জুন ২০২৫ ১,১১৯

প্রাইজবন্ড সম্পর্কিত ব্লগ সমূহ