
পুরানো প্রাইজবন্ড: ড্রয়ের পর কি বদলাতে হবে?
প্রতি ড্রয়ের পর আপনার পুরানো প্রাইজবন্ড ফেরত দিয়ে কি নতুন প্রাইজবন্ড নিতে হয়? এই প্রশ্নটি প্রায়শই প্রাইজবন্ডের সাথে জড়িত অনেকেই করে থাকেন। আজকের লেখায় আমরা এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করবো, পাশাপাশি প্রাইজবন্ড নিয়ে প্রচলিত কিছু ভুল ধারণার বিষয়েও আলোকপাত করবো।
প্রাইজবন্ড সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা আছে যে, প্রতিটি ড্রয়ের পর পুরানো প্রাইজবন্ড অকার্যকর হয়ে যায় এবং নতুন প্রাইজবন্ড কিনতে হয়। এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল এবং ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে, যতক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার প্রাইজবন্ড বাতিল ঘোষণা না করে, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার পুরানো প্রাইজবন্ড সম্পূর্ণ কার্যকর থাকবে এবং প্রতিটি ড্রতে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হবে।
প্রাইজবন্ডের কার্যকারিতা ও বৈধতা
প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক, প্রাইজবন্ড কি এবং কিভাবে এটি কাজ করে। প্রাইজবন্ড হলো একটি সরকারি সঞ্চয় মাধ্যম, যা বাংলাদেশ ব্যাংক দ্বারা পরিচালিত হয়। এটি ঝুঁকিমুক্ত এবং নিরাপদ বিনিয়োগের একটি মাধ্যম, যেখানে আপনি ছোট পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে বড় পুরস্কারের সুযোগ পেতে পারেন। প্রাইজবন্ড কিনে নিলে এটি আপনার ব্যক্তিগত সম্পদ হয়ে যায়, এবং যতদিন ইচ্ছা আপনি এটি সংরক্ষণ করতে পারেন।
এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, একবার প্রাইজবন্ড কিনে নিলে, সেটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত প্রতিটি ড্রতে অংশ নিতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক বা প্রাইজবন্ড কর্তৃপক্ষ সেই সিরিজটি বাতিল ঘোষণা না করা পর্যন্ত আপনার পুরানো প্রাইজবন্ড সম্পূর্ণ কার্যকর থাকবে। তাই প্রতিটি ড্রয়ের পর পুরানো প্রাইজবন্ড ফেরত দেওয়ার বা নতুন প্রাইজবন্ড কেনার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
পুরস্কার জেতার সুযোগ
প্রতিটি প্রাইজবন্ড ড্রতে নির্দিষ্ট সংখ্যক পুরস্কার দেওয়া হয়। ড্রয়ের সময় যদি আপনার প্রাইজবন্ডের নাম্বার বিজয়ী হয়, তবে আপনি সেই পুরস্কার দাবি করতে পারবেন। কিন্তু এখানে একটি শর্ত রয়েছে, আপনাকে সেই পুরস্কার দুই বছরের মধ্যে দাবি করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পুরস্কার দাবি না করলে আপনি সেই পুরস্কারের অধিকার হারাবেন। তবে, এটি গুরুত্বপূর্ণ যে পুরস্কার দাবি করার জন্য আপনার পুরানো প্রাইজবন্ডকে বাতিল বা নতুন প্রাইজবন্ড কেনার কোনো নিয়ম নেই।
প্রাইজবন্ড কেনার সুবিধা
প্রাইজবন্ড একটি সহজলভ্য সঞ্চয় মাধ্যম, যা আপনি যে কোনো ব্যাংক বা পোস্ট অফিস থেকে কিনতে পারেন। এটি একটি ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ, এবং এর মাধ্যমে আপনি ছোট বিনিয়োগ করে বড় পুরস্কার জেতার সুযোগ পাবেন। প্রাইজবন্ডের বিশেষ সুবিধা হলো, এটি শুধুমাত্র একটি পুরস্কারের সুযোগই নয়, বরং একটি সঞ্চয় হিসেবেও কাজ করে। একবার প্রাইজবন্ড কিনলে সেটি প্রতিটি ড্রতে অংশ নিতে পারে, যা এটিকে একটি অনন্য সঞ্চয় মাধ্যম হিসেবে গণ্য করে।
পুরোনো প্রাইজবন্ডের বৈধতা
অনেকেই মনে করেন, ১০ বছর বা ২০ বছর আগে কেনা প্রাইজবন্ড পরবর্তী ড্রতে অংশ নিতে পারবে না। এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। আপনি যদি বহু বছর আগেও প্রাইজবন্ড কিনে থাকেন, সেটিও পরবর্তী ড্রতে অংশ নিতে পারে, যতদিন না বাংলাদেশ ব্যাংক বা প্রাইজবন্ড কর্তৃপক্ষ সেই সিরিজটি বাতিল ঘোষণা করে। এর মানে হলো, আপনার পুরানো প্রাইজবন্ড যতদিন বৈধ থাকবে, ততদিন সেটি প্রতিটি ড্রতে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হবে।
নতুন প্রাইজবন্ড কেনার বাধ্যবাধকতা
প্রতিটি ড্রর পর নতুন প্রাইজবন্ড কেনার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আপনি চাইলে নতুন প্রাইজবন্ড কিনতে পারেন, তবে এটি বাধ্যতামূলক নয়। পুরানো প্রাইজবন্ড বৈধ থাকলে তা প্রতিটি ড্রতে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হবে, এবং আপনি পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হতে পারবেন।
উপসংহার
আশা করছি, আজকের এই আলোচনা আপনাদের প্রাইজবন্ড সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুল ধারণা দূর করতে পেরেছে। ড্রয়ের পর পুরানো প্রাইজবন্ড ফেরত দেওয়ার বা নতুন প্রাইজবন্ড কেনার কোনো প্রয়োজন নেই, যতদিন সেটি বৈধ থাকবে। প্রাইজবন্ড কিনে আপনি শুধুমাত্র পুরস্কারের সুযোগই নয়, বরং একটি নিরাপদ এবং লাভজনক সঞ্চয় মাধ্যমের সুবিধাও পাবেন।
এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ, যা আপনাকে ঝুঁকিমুক্তভাবে বড় পুরস্কার জেতার সম্ভাবনা দেয়। তাই, প্রাইজবন্ড নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি থাকলে অবশ্যই আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন, এবং আমাদের ব্লগ পোস্ট পড়ুন যাতে আরও বিস্তারিত তথ্য পেতে পারেন।
Latest Blog
৩১শে জুলাই ২০২৪, বুধবার প্রাইজবন্ডের ১১৬তম ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই ড্র'তে মোট আশি সিরিজের প্রাইজবন্ডে...
৩১ জুলাই ২০২৪ ৩১,৬৮১
বিজয়ী হলেন যারা ১১৯তম প্রাইজবন্ড ড্র'তে
৩০ এপ্রিল ২০২৫ ২৬,৪৩৩
১১৮তম প্রাইজবন্ড ড্রতে তিনি প্রথম পুরস্কার জিতে নিয়েছেন। তার প্রাইজবন্ডের নম্বর হল কঙ ০৬০৩৯০৮।
০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৭,৬২১
১২০তম প্রাইজবন্ড ড্র, ৮২টি ৬ লাখ টাকার প্রথম পুরস্কারসহ ৩৭৭২টি পুরস্কার।
৩১ জুলাই ২০২৫ ৮,২৯৮
প্রাইজবন্ডের ড্র বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে 'ড্র' কমিটি কর্তৃক পরিচালিত হয়। ড্র অনুষ্ঠ...
০৭ মে ২০২৪ ৩,৬১৮
৫২ বছরের নূরুল আমিন ১১৭তম প্রাইজবন্ড ড্র'তে প্রথম পুরস্কার জিতেছেন। তার প্রাইজবন্ডের নাম্বারটি হলো গ...
০২ নভেম্বর ২০২৪ ১৯,১৬২
বাংলাদেশের প্রথম প্রাইজবন্ড ১৯৭৪ সালে ১০ ও ৫০ টাকা মূল্যমানে চালু হয়। ১৯৯৫ সালে ১০০ টাকা মূল্যের প্র...
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২২৮
১০০০ পিস প্রাইজবন্ড কিনেও পুরস্কার না পাওয়া হতাশাজনক হলেও এটি বাস্তব। তি ১০ লাখ প্রাইজবন্ডের মধ্যে...
০৬ জুন ২০২৪ ৪,১৬৪
হাসিবুল আলম খান, মাত্র ২৩ বছর বয়সে, ১১৮তম প্রাইজবন্ড ড্রতে প্রথম পুরস্কার জিতেছেন, যা সত্যিই একটি অ...
০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১১,৪৮১