
একজনের প্রাইজবন্ড, অন্যজনের পুরস্কার! কীভাবে সম্ভব?
প্রাইজবন্ডের পুরস্কার জেতা নিঃসন্দেহে একটি আনন্দদায়ক ঘটনা। এ রকম সময় আপনি হয়ত সেই সুখবরটি সবাইকে জানাতে চাইবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রাইজবন্ডের ছবি শেয়ার করে বন্ধু ও পরিচিতদের আনন্দে শামিল করতে চাইবেন। কিন্তু, একটু ভাবুন তো—আপনার শেয়ার করা সেই ছবি যদি কোনো স্ক্যামারের হাতে পড়ে? যদি সে সেই ছবি বা নাম্বর ব্যবহার করে পুরস্কার তুলে নেয়?
এমন শঙ্কা অনেকের মনে আসে এবং স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে: একজনের প্রাইজবন্ডের ছবি বা নাম্বর ব্যবহার করে কি অন্য কেউ পুরস্কার তুলতে পারে?
আমরা এমন একসময়ে বাস করছি, যেখানে স্ক্যামিং বা প্রতারণা খুব সাধারণ ঘটনা। পৃথিবীর সব দেশেই এমন ঘটনা ঘটে। আমাদের দেশেও মানুষ প্রতারণার নতুন নতুন উপায় বের করে। প্রাইজবন্ডের ক্ষেত্রেও কি এমনটা হতে পারে? পুরস্কার জেতার আনন্দ এক মূহুর্তেই বিষাদে পরিণত হতে পারে। তাহলে পুরস্কার জিতেও পুরস্কার হারাচ্ছেন না তো?
প্রাইজবন্ড প্রতারণা ঠেকাতে করণীয় কী?
কেহ যদি এইরকম অপকর্ম করতে চায় তাকে ঠেকাবেন কিভাবে? এবং এই প্রাইজবন্ডটি যে আপনার তারই বা প্রমাণ কি? আপনি যখন প্রাইজবন্ড কিনেছেন তখন আপনার নাম পরিচয় তো ব্যাংক লিখে রাখে নাই। সমাধান কি?
ভুল ধারণা দূর করুনঃ
প্রাইজবন্ড নিয়ে কিছু মানুষের মনে ভুল ধরনা প্রচলিত আছে, আজকে এইরকম একটি ভুল ধরনা ভাঙ্গতে এই আলোচনা আপনাকে সাহায্য করবে।
হ্যাঁ, আপনাকেই বলছি, পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রাইজবন্ডের ছবি শেয়ার করে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নাই। কোনোভাবেই আপনার প্রাইজবন্ডের পুরস্কার অন্য কেহ তুলতে পারবে না বা স্কামিংয়ের কোন সুযোগ নাই এখানে। কিন্তু কেন? জানুন তাহলে মূল কথা।
প্রাইজবন্ড হলো একটি “বাহকী বন্ড”। মানে যার কাছে থাকবে কেবলমাত্র তিনিই তার মালিক। প্রাইজবন্ডের মালিকানা প্রমাণের জন্য কোনো ধরনের কাগজপত্র বা রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজন নাই। আপনার হাতে আছে এইটিই একমাত্র প্রমাণ।
তবে একটা বিষয় মনে রাখা জরুরি। যদি প্রাইজবন্ডটি হারিয়ে ফেলেন, তাহলে তার মালিকানাও হারাবেন। কেননা হারানো প্রাইজবন্ডের জন্য জিডি করে বা নকল কপি তুলে মালিকানা দাবি করার সুযোগ নেই। এ কারণেই প্রাইজবন্ড কেনার সময় ব্যাংক আপনার নাম বা পরিচয় রেকর্ড রাখে না।
প্রাইজবন্ড প্রতারণা ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকাঃ
বাংলাদেশ ব্যাংক খুবই সিম্পলভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। এই সিম্পল কাজটির মাধ্যমেই সকল ধরনের স্কামিং বা প্রতারণার সুযোগকে শূন্যতে নামিয়ে এনেছে। এই কাজটি কি জানতে চান?
প্রাইজবন্ড পুরস্কারের অবেদনের সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি শর্ত জুড়ে দিয়েছে, সেটি হলো পুরস্কার পেতে হলে “প্রাইজবন্ডের মূল কপি জমা দিতে হবে”। এই একটি শর্ত যা সকল ধরনের প্রতারণা বা স্কামিং ঠেকানোর জন্য ম্যাজিক রূপে কাজ করছে।
কান নিয়ে গেছে চিলে, চিলের পেছনে না দৌড়িয়ে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করুন তো পুরস্কার তোলার জন্য যেখানে “প্রাইজবন্ডের মূল কপি” জমা দেওয়ার নিয়ম সেখানে প্রাইজবন্ডের ছবি বা নাম্বার দিয়ে পুরস্কার তোলা কি সম্ভব?
মন খুলে উদযাপন করুন
সুতরাং পুরস্কার জিতলে মন খুলে চিল করুন, বন্ধুদের সাথে প্রাইজবন্ডের ছবি শেয়ার করুন, যত ইচ্ছা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করুন এবং হা হা করে হাসুন। এখানে স্ক্যামিংয়ের কোনো সুযোগ নেই। তবে সতর্ক থাকুন, আপনার প্রাইজবন্ডটি যেন নিরাপদ জায়গায় থাকে।
তাই, পুরস্কার জেতার আনন্দের মুহূর্তগুলোকে ভয়ের কারণে ম্লান করবেন না। বরং মন খুলে উদযাপন করুন।
Latest Blog
জোড়া বন্ডের সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো, এতে পুরস্কার জেতার সম্ভাবনা অর্ধেক হয়ে যায়। দুটি বন্ড মিলে একটি ম...
২০ মে ২০২৫ ৬৫৩
প্রাইজবন্ড, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় সঞ্চয় ও পুরস্কার জয়ের মাধ্যম হিসেবে পরিচিত, এখন...
২০ মে ২০২৪ ২,০২৩
প্রাইজবন্ডের ড্র বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে 'ড্র' কমিটি কর্তৃক পরিচালিত হয়। ড্র অনুষ্ঠ...
০৭ মে ২০২৪ ২,৯৩৬
১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের অর্থনীতি ছিল খুবই দুর্বল। দেশকে পুনর্নির্মাণের জন্য সরকারকে জনগণে...
২৬ মে ২০২৪ ১,৯২৮
১১৮তম প্রাইজবন্ড ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে ২রা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে। এই ড্রতে ৮১টি সিরিজের প্রাইজবন্ডের...
০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১১,৭৫০
দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর তিনি ১১৬তম ড্র'তে পেয়েছেন দ্বিতীয় পুরস্কার। মাহবুব মোরশেদ, ১১৬তম প্রাইজবন্ড ড্...
০২ আগষ্ট ২০২৪ ৯,৪৪৩
প্রাইজবন্ড একসময় বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় বিনিয়োগের বিকল্প ছিল। এক দশক আগেও প্রাইজবন্ড উপহার ও পুরস...
২০ মে ২০২৪ ২,০৬৯
১৯৭৪ সালে ১০ টাকা ও ৫০টাকা মানের প্রাইজবন্ড চালু করা হয়েছিল কিন্তু ১৯৯৫ সালে ১০টাকা ও ৫০টাকার প্রাইজ...
১৭ মে ২০২৪ ৩,৫০১
প্রাইজবন্ড ক্রয়ের ক্ষেত্রে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা আবশ্যক নয়। যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক নগদ টাকা দিয়...
১৪ মে ২০২৪ ২,২৪৯