
প্রাইজবন্ডের পুরস্কারের উপর কি কর দিতে হয়?
প্রাইজবন্ডের পুরস্কারের অর্থের উপর উৎসে কর প্রযোজ্য হয়। এই কর পুরস্কার প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কেটে নেওয়া হয়। বর্তমানে, প্রাইজবন্ডের পুরস্কারের মোট অর্থের ২০ শতাংশ হারে এই কর কেটে নেওয়া হয়। এর অর্থ হলো, পুরস্কারের যে অর্থ ঘোষণা করা হয়, তার পুরোটাই প্রাপকের হাতে আসে না। একটি অংশ কর হিসেবে সরকারি কোষাগারে জমা হয়।
উদাহরণস্বরূপ, যদি একজন ব্যক্তি প্রাইজবন্ড লটারিতে প্রথম পুরস্কার হিসেবে ৬,০০,০০০ টাকা জেতেন, তবে এই মোট অর্থের ২০ শতাংশ, অর্থাৎ ১,২০,০০০ টাকা কর হিসেবে কেটে নেওয়া হবে। ফলস্বরূপ, বিজয়ী ব্যক্তি হাতে পাবেন ৪,৮০,০০০ টাকা। এই করের অর্থ সরাসরি সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়।
কর প্রবর্তনের ইতিহাসঃ
প্রাইজবন্ডের পুরস্কারের উপর কর আরোপের এই নিয়মটি ২০১২ সাল থেকে কার্যকর হয়েছে। এর আগে প্রাইজবন্ডের পুরস্কারের উপর কোনো কর আরোপ করা হতো না। সরকারের নীতি পরিবর্তন এবং রাজস্ব আহরণের উদ্দেশ্যে এই নিয়ম চালু করা হয়। করের এই হার সরকারি নীতিমালা দ্বারা নির্ধারিত হয়। সরকার প্রয়োজন অনুসারে এই হার পরিবর্তন করতে পারে। তাই, ভবিষ্যতে এই করের হার কমতে বা বাড়তে পারে। প্রাইজবন্ডের পুরস্কার সংক্রান্ত নিয়মাবলী পরিবর্তনের ক্ষমতা সরকারের রয়েছে।
করের প্রভাব এবং জনগণের প্রতিক্রিয়া
প্রাইজবন্ডের পুরস্কারের উপর কর আরোপের বিষয়টি জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিতে পারে। একদল মনে করতে পারে যে, যেহেতু প্রাইজবন্ড সুদমুক্ত একটি সঞ্চয় উপকরণ, তাই এর পুরস্কারের উপর কর না থাকা উচিত। তারা মনে করেন, এটি তাদের আয়ের উপর একটি বাড়তি বোঝা। যখন কোনো ব্যক্তি প্রাইজবন্ড কেনেন, তখন তার মূল উদ্দেশ্য থাকে লটারির মাধ্যমে একটি বড় অঙ্কের পুরস্কার জেতা। এই পুরস্কার জেতার সম্ভাবনা তাকে সঞ্চয়ে উৎসাহিত করে। তবে, পুরস্কারের উপর কর আরোপের ফলে প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ কিছুটা কমে যায়, যা প্রাইজবন্ডের আকর্ষণ কিছুটা কমাতে পারে। বিশেষ করে, যখন পুরস্কারের পরিমাণ ছোট হয়, তখন ২০% কর কেটে নেওয়ার ফলে প্রাপ্ত অর্থ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। তবে, বড় পুরস্কারের ক্ষেত্রেও করের পরিমাণটি নেহাত কম নয়।
অন্যদিকে, সরকার জনগণের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে থাকে। এই কাজের জন্য সরকারের তহবিলের প্রয়োজন হয়। পুরস্কারের উপর কর আরোপের মাধ্যমে সরকার সেই তহবিল সংগ্রহ করে থাকে। এই করের অর্থ বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্প এবং দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যবহার করা হয়। সরকার যখন এই করের হার নির্ধারণ করে, তখন তারা দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, রাজস্ব সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তা এবং জনগণের উপর এর প্রভাব বিবেচনা করে থাকে।
কর প্রদান পদ্ধতি
প্রাইজবন্ডের পুরস্কারের অর্থ সংগ্রহের সময়ই এই উৎসে কর কেটে নেওয়া হয়। বিজয়ী ব্যক্তিকে আলাদাভাবে কর জমা দিতে হয় না। পুরস্কার প্রদানকারী ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান করের অংশ কেটে রেখে বাকি অর্থ বিজয়ীকে প্রদান করে এবং কেটে রাখা করের অংশ সরকারি কোষাগারে জমা দেয়। এটি একটি সহজ পদ্ধতি যা পুরস্কার প্রদান প্রক্রিয়াকে সুগম করে।
Latest Blog
আপনার কাছে যদি ১৯৯৫, ২০০০, ২০০২ সালের পুরাতন প্রাইজবন্ড থাকে, হতাশ হবেন না! অনেকেই ভাবতে পারেন এত পু...
১৩ মে ২০২৪ ৪,১৭৭
আমরা এমন একসময়ে বাস করছি, যেখানে স্ক্যামিং বা প্রতারণা খুব সাধারণ ঘটনা। পৃথিবীর সব দেশেই এমন ঘটনা ঘট...
১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ২,৪৫৮
নতুন না পুরাতন—কোন প্রাইজবন্ড কিনবেন? নতুন বন্ডে আছে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, কিন্তু অপেক্ষা করতে হয় ড...
৩১ আগষ্ট ২০২৫ ১৩২
প্রাইজবন্ডে সরাসরি লভ্যাংশের হার নির্ধারিত নেই। বাংলাদেশের প্রাইজবন্ড ছোট ও মাঝারি আয়ের লোকেদের জন্...
১৯ মে ২০২৪ ২,৮৪৬
১১৮তম প্রাইজবন্ড ড্রতে ঘঘ সিরিজ অন্তর্ভুক্ত হলেও ২ মাস পূর্ণ না হওয়ায় এই সিরিজ থেকে কোনো পুরস্কার...
২০ জানুয়ারী ২০২৫ ৮,২০৩
প্রাইজবন্ডের ড্র-তে কোন নাম্বারগুলো জেতার সম্ভাবনা খুবই কম, তা খুঁজে বের করতে অনেকেই আগ্রহী। কিন্তু...
২২ আগষ্ট ২০২৫ ৭৩৫
পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রাইজবন্ড উলটো করে ধরলে, যদি কেউ পূর্বে টাকা উত্তোলন করে থাকে, সেখানে একটি সিল দেওয়...
১২ অক্টোবর ২০২৪ ২,৮৯১
৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হলো ১১৯তম প্রাইজবন্ডের ড্র। এই ড্রয়ের সবচেয়ে আকাঙ্খিত পুরস্কার, প্...
৩০ এপ্রিল ২০২৫ ১০,০৮২
প্রাইজবন্ড, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় সঞ্চয় ও পুরস্কার জয়ের মাধ্যম হিসেবে পরিচিত, এখন...
২০ মে ২০২৪ ২,২৯০