সরকার পতনে প্রাইজবন্ডের নিরাপত্তা কতটুকু?
প্রাইজবন্ডের নিরাপত্তা: সরকার পতনের প্রেক্ষাপটে বিশ্লেষণ
প্রাইজবন্ড এবং রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব
প্রাইজবন্ড হলো একটি জনপ্রিয় সঞ্চয় পদ্ধতি যেখানে সরকার জনগণের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে তা নির্দিষ্ট সময়ের পর ফেরত দেয় এবং এর সাথে বিভিন্ন ধরনের পুরস্কারও দেয়। প্রায়ই, রাজনৈতিক পরিবর্তন বা সরকার পতনের সময় মানুষের মনে এই প্রশ্ন জাগে যে, তাদের বিনিয়োগ করা টাকা কি নিরাপদ থাকবে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হলে আমাদের রাষ্ট্র এবং সরকারের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে হবে।
রাষ্ট্র বনাম সরকারঃ
➧ রাষ্ট্র: রাষ্ট্র হল একটি স্বাধীন স্থায়ী সংস্থা যার নিজস্ব ভূমি, জনগণ, সরকার এবং সার্বভৌমত্ব রয়েছে। এটি একটি স্থায়ী প্রতিষ্ঠান।
➧ সরকার: সরকার হলো রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য গঠিত একটি সংস্থা। এটি নির্বাচিত হয় এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ক্ষমতায় থাকে। সরকার পরিবর্তিত হতে পারে কিন্তু রাষ্ট্র অব্যাহত থাকে।
প্রাইজবন্ড এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানঃ
প্রাইজবন্ডের ব্যবস্থাপনা সাধারণত বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের দ্বারা করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানগুলো রাষ্ট্রের আইন ও নিয়মাবলী অনুযায়ী পরিচালিত হয়। সরকার পতন হলে নতুন সরকার আসতে পারে কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানগুলো অব্যাহত থাকে। তাদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পরিবর্তিত না হলেও, কার্যপ্রণালীতে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে।
প্রাইজবন্ডের নিরাপত্তাঃ
➧ রাষ্ট্রীয় সমর্থন: প্রাইজবন্ড হলো রাষ্ট্র সমর্থিত একটি বিনিয়োগ। সরকার পতন হলেও রাষ্ট্র অব্যাহত থাকে এবং এর দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য।
➧ আইনগত সুরক্ষা: প্রাইজবন্ড সম্পর্কিত সকল কার্যকলাপ আইনগতভাবে সুরক্ষিত। কোন সরকারই এই আইনকে অবৈধ ঘোষণা করতে পারে না।
➧ প্রতিষ্ঠানগত স্বাধীনতা: বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব স্বাধীনতা থাকে। তারা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছাড়াই তাদের কাজ পরিচালনা করে।
সরকার পতনের প্রভাবঃ
সরকার পতনের কারণে প্রাইজবন্ডের কার্যক্রমে কিছুটা বিলম্ব হতে পারে বা কিছু নিয়মে পরিবর্তন আসতে পারে। তবে, বিনিয়োগকারীদের মূলধন এবং পুরস্কারের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই।
ইতিহাস থেকে অভিজ্ঞতাঃ
➧ বাংলাদেশে প্রাইজবন্ড চালু হওয়ার পর থেকে অনেক সরকার এসেছে এবং গেছে কিন্তু প্রাইজবন্ড প্রকল্প সবসময় সচল রয়েছে।
➧ অন্যান্য দেশেও প্রাইজবন্ডের মতো সঞ্চয় পদ্ধতি রয়েছে এবং সেখানেও সরকার পরিবর্তনের পরেও এই প্রকল্পগুলো সফলভাবে চালু রয়েছে।
উপসংহারঃ
প্রাইজবন্ড একটি নিরাপদ এবং দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের মাধ্যম। সরকার পতন হলেও প্রাইজবন্ডের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অপরিবর্তিত থাকে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এই প্রকল্পকে সুরক্ষিত রাখার জন্য কাজ করে। তাই, প্রাইজবন্ডে বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগ নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।
Latest Blog
শুধু যাদের সাথে আপনার জোড়া মিলবে তারাই আপনার ফোন নাম্বার দেখতে পাবে—অন্য কেউ দেখতে পাবে না। যদি তারা...
০৯ নভেম্বর ২০২৪ ৩০৯
আপনার কাছে যদি ১৯৯৫, ২০০০, ২০০২ সালের পুরাতন প্রাইজবন্ড থাকে, হতাশ হবেন না! অনেকেই ভাবতে পারেন এত পু...
১৩ মে ২০২৪ ১,৭৩৭
প্রাইজবন্ড, অনেকের কাছেই স্বপ্নের টিকিট। এক টিকিটে লুকিয়ে থাকে ৬ লাখ টাকার স্বপ্ন। কিন্তু বিশ্বাস ক...
২২ অক্টোবর ২০২৪ ৯৫২
প্রাইজবন্ডের ড্র বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে 'ড্র' কমিটি কর্তৃক পরিচালিত হয়। ড্র অনুষ্ঠ...
০৭ মে ২০২৪ ১,০২৯
প্রাইজবন্ডের কোটি কোটি টাকার পুরস্কার অদাবি হয়ে যাওয়ার ফলে প্রাইজবন্ডের মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ব...
০৮ জুলাই ২০২৪ ১,৪২০
এই ড্র’তে নতুন করে “ঘগ” সিরিজটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার ফলে এবার ড্র’তে নতুন একটি প্রথম পুরস্কারস...
৩১ অক্টোবর ২০২৪ ২১,০৫০
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে আপনি এবং আমার মতো সাধারণ গ্রাহক হিসেবে কল্পনা করুন। যেমন আমরা প্রাইজবন্ড কেনা...
২৬ মে ২০২৪ ৯২৪
সারাজীবন কষ্ট করে হয়ত কিছু টাকা জমিয়েছেন। কিন্তু কোথায় টাকা খাটাবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না। কারণ যে কো...
১৬ মে ২০২৪ ১,০৭২
আপনার কাছে অলস টাকা পড়ে আছে, এবং ব্যাংকে রেখে সুদ খেতে চাইছেন না। তাহলে এই টাকা প্রাইজবন্ডে বিনিয়ো...
২২ মে ২০২৪ ১,০৮২