
১,০০০ প্রাইজবন্ড কিনেও কেন মিলছে না পুরস্কার?
প্রাইজবন্ড কেনার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন আকর্ষণীয় পুরস্কার জিতে নিতে পারেন। তবে অনেকেই আছেন যারা শত শত প্রাইজবন্ড কিনেও কোনো পুরস্কার জিততে পারেন না। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কেন এমনটা ঘটে এবং এর পিছনের কিছু কারণ।
পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনা
প্রথমত, প্রাইজবন্ডের পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। প্রতি ১০ লাখ প্রাইজবন্ডের মধ্যে মাত্র ৪৬টি বিজয়ী হয়। এটি মানে, প্রতি ২১,৭৩৯টি প্রাইজবন্ডের মধ্যে মাত্র ১টি জয়ী হয়। তাই প্রাইজবন্ড কেনা মানেই পুরস্কার জেতা নয়; এটি সম্পূর্ণ ভাগ্যের খেলা। বাংলাদেশের প্রাইজবন্ডের ড্র প্রতি তিন মাস পর পর অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রাইজবন্ডের মধ্যে খুবই সীমিত সংখ্যক পুরস্কার দেওয়া হয়। ফলে ১০০০ প্রাইজবন্ড কিনলেও পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।
ভাগ্য নির্ভরতা
প্রাইজবন্ডের ফলাফল পুরোপুরি ভাগ্যের উপর নির্ভর করে। এখানে কোনো ধরনের কৌশল বা পরিকল্পনা কাজে লাগানো সম্ভব নয়। প্রতি ১০ লাখ প্রাইজবন্ডের মধ্যে মাত্র ৪৬টি বিজয়ী হয়, অর্থাৎ প্রতি ২১,৭৩৯টি প্রাইজবন্ডের মধ্যে মাত্র ১টি জয়ী হয়। ১০০টি প্রাইজবন্ডে জয়ের সম্ভাবনা মাত্র ০.০৪৬%, আর ১০০০টি প্রাইজবন্ডে জয়ের সম্ভাবনা ০.৪৬%। তাই যতই প্রাইজবন্ড কিনুন না কেন, ভাগ্য সহায় না হলে পুরস্কার জেতার সম্ভাবনা কম।
বৈধতা ও সঠিক তথ্য
প্রাইজবন্ডের পুরস্কার জেতার জন্য প্রয়োজন সঠিক প্রাইজবন্ড সিরিয়াল নম্বর এবং বৈধ প্রাইজবন্ড। প্রাইজবন্ড কেবলমাত্র সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বিক্রেতার কাছ থেকে ক্রয় করা উচিত। তাই সবসময় বৈধ এবং সক্রিয় প্রাইজবন্ড কিনতে হবে।
সংখ্যা ও সময়
আপনার কেনা প্রাইজবন্ডের সংখ্যা এবং কখন সেগুলো কিনেছেন তা গুরুত্বপূর্ণ। পুরস্কার জেতার জন্য নিয়মিত এবং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ প্রয়োজন। অনেক সময় দেখা যায় যে একবারে অনেক প্রাইজবন্ড কিনলেও সেগুলো পুরস্কার পায় না। তবে ধারাবাহিকভাবে প্রাইজবন্ড কিনতে থাকলে পুরস্কার জেতার সম্ভাবনা বাড়ে। তাই নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে প্রাইজবন্ড কেনার মাধ্যমে আপনি পুরস্কারের সুযোগ বাড়াতে পারেন।
পর্যালোচনা ও গবেষণা
প্রাইজবন্ড কেনার আগে এবং পরেও কিছু পর্যালোচনা ও গবেষণা করা জরুরি। কোনো সিরিজের প্রাইজবন্ডে পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি হতে পারে, এবং কোনো সময়ে প্রাইজবন্ড কেনা উচিত তা জানা গুরুত্বপূর্ণ।
সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ
প্রাইজবন্ড কিনে পুরস্কার জেতার জন্য সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, সঠিক সময়ে প্রাইজবন্ডের ফলাফল চেক করা, পুরস্কার পাওয়ার ক্ষেত্রে সময়মতো দাবি করা ইত্যাদি। নিয়মিতভাবে প্রাইজবন্ডের ড্র-এর তারিখ ও ফলাফল সম্পর্কে আপডেট থাকা এবং পুরস্কার পাওয়ার ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা উচিত। সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে পুরস্কার জেতার সম্ভাবনা বাড়ে এবং পুরস্কার দাবির ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হয় না।
উপসংহার
১০০০ পিস প্রাইজবন্ড কিনেও পুরস্কার না পাওয়া হতাশাজনক হলেও এটি বাস্তব। প্রাইজবন্ডে পুরস্কার জেতা সম্পূর্ণরূপে ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে। সুতরাং, প্রাইজবন্ড কেনার সময় এটির পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে বিনিয়োগ করা উচিত এবং অন্য ধরনের বিনিয়োগ মাধ্যমেও মনোযোগ দেওয়া উচিত। এতে আপনার বিনিয়োগ ঝুঁকি কম হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
Latest Blog
আপনার কাছে অলস টাকা পড়ে আছে, এবং ব্যাংকে রেখে সুদ খেতে চাইছেন না। তাহলে এই টাকা প্রাইজবন্ডে বিনিয়ো...
২২ মে ২০২৪ ১,৬০২
একটি প্রচলিত ভুল ধারণা যে প্রতিটি ড্রয়ের পর পুরানো প্রাইজবন্ড অকার্যকর হয়ে যায় এবং নতুন প্রাইজবন্...
২১ অক্টোবর ২০২৪ ১,১৫৭
আপনার কাছে যদি ১৯৯৫, ২০০০, ২০০২ সালের পুরাতন প্রাইজবন্ড থাকে, হতাশ হবেন না! অনেকেই ভাবতে পারেন এত পু...
১৩ মে ২০২৪ ২,৫৫০
প্রাইজবন্ড একবার কিনলে শুধু একবারই ড্র-এর আওতায় আসবে না। প্রাইজবন্ড হল বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক পরিচা...
১৩ মে ২০২৪ ১,৭২৫
প্রাইজবন্ডকে লিকুইড ইনভেস্টমেন্টের মাধ্যম হিসেবে ধরা হয়। তাই প্রাইজবন্ডের মালিকেরা এক ধরনের স্বাধীনত...
২৯ অক্টোবর ২০২৪ ৯৩৫
শ্রোতাদের কথা: আমরা আমাদের গ্রাহকদের মতামতকে মূল্য দিই! ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল সহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম...
২৮ অক্টোবর ২০২১ ১,৫৬৫
প্রাইজবন্ড ক্রয়ের ক্ষেত্রে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা আবশ্যক নয়। যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক নগদ টাকা দিয়...
১৪ মে ২০২৪ ১,৩১৩
প্রাইজবন্ড একটি বাহকী দলিল; বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ইস্যু হওয়ার পর যার কাছে থাকে, তিনি এর মালিক হন। আপ...
২৯ মে ২০২৪ ১,৩৬৫
১৯৯৫ সালে প্রাইজবন্ড চালু হলেও, গ্রাহকবান্ধব সংস্কারের অভাবে জনপ্রিয়তা হারিয়েছে। গ্রাহকদের ভোগান্ত...
২২ মে ২০২৪ ২,৫৯৫