প্রাইজবন্ডে লভ্যাংশ কীভাবে দেয়?
প্রাইজবন্ডে সরকার কি কোনো প্রকার লভ্যাংশ দেয়? লভ্যাংশ দিলে কীভাবে দেয় এবং কত পার্সেন্ট দেয়? আপনি শুনলে অবাক হবেন যে সরকার প্রাইজবন্ডের উপর ৬.৫% হারে লভ্যাংশ দেয়। এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত থাকছে এই ভিডিওতে।
✅ সমাজের সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে সঞ্চয় প্রবণতা বৃদ্ধির কথা বিবেচনা করেই এই প্রকল্পের প্রবর্তন করা হয়েছে। প্রাইজবন্ড বিক্রি করে সরকার সরাসরি জনগণের কাছ থেকে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় আহরণের মাধ্যমে ঋণ সংগ্রহ করে এবং বড় কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজে লাগায়। সেই অর্থে প্রাইজবন্ড কিনে জনগণ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অংশগ্রহণ করতে পারে।
✅ বিদেশি ঋণ সংগ্রহ করা অনেক কষ্টসাধ্য, সেই বিবেচনায় অভ্যন্তরীণ উৎস হতে অর্থ আহরণ করা অনেকটাই সহজতর। এই প্রকল্পের মাধ্যমে মূল্য স্ফীতিও রোধ করা যায়, যা বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের মুদ্রানীতির একটি হাতিয়ার।
✅ ঋণ শব্দের সাথে লভ্যাংশের সম্পর্ক আছে। প্রাইজবন্ড বিক্রয়ের মাধ্যমে সরকার জনগণের কাছ থেকে যে ঋণ সংগ্রহ করে, তিন মাস পর ড্র ঘোষণার মাধ্যমে এই ঋণের লভ্যাংশ প্রদান করে থাকে।
এখন প্রশ্ন হল, কত পার্সেন্ট হারে লভ্যাংশ প্রদান করে? অথবা সরকার তাদের ইচ্ছেমতো লভ্যাংশ দেয়? এর সঠিক ব্যাখ্যা কি?
সরকার তার ইচ্ছেমতো লভ্যাংশ প্রদান করে না। এই লভ্যাংশ প্রদানের হার নির্ধারণ করা হয়েছে সুনিদির্ষ্ট বা সায়েন্টেফিক ভাবে।
✅ প্রতি সিরিজে প্রাইজবন্ডের সংখ্যা ১০লাখ, যার বাজার মূল্য ১০ কোটি টাকা। তিন মাস পর পর প্রতি সিরিজের জন্য পুরস্কার দেয়া হয় ৪৬টি নাম্বারকে। এই ৪৬টি নম্বরের মধ্যে ১ম পুরস্কার ১টি , ২য় পুরস্কার ১টি, ৩য় পুরস্কার ২টি, ৪র্থ পুরস্কার ২টি এবং ৫ম পুরস্কার ৪০টি। এই ৪৬টি পুরস্কারের মূল্যমান ১৬ লাখ পঁচিশ হাজার টাকা। প্রতি তিন মাসে ১০ কোটি টাকায় ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা লভ্যাংশ দিলে, বছরে প্রতি সিরিজে লভ্যাংশ আসে ৬৫লাখ টাকা।
বছরে ১০কোটি টাকায় ৬৫ লাখ টাকা লভ্যাংশ দিলে এর পার্সেন্টেজ দাঁড়ায় ৬.৫০। এই লভ্যাংশ ড্রতে বিজয়ী প্রাইজবন্ডকে পুরস্কারের মূল্য অনুযায়ী বণ্টন করে দেয়া হয়।
ব্যাংকে জামানতের উপর লভ্যাংশের হার কমতে বাড়তে পারে, কিন্তু প্রাইজবন্ডের লভ্যাংশের হার কমে না বা বাড়ে না। সেই ১৯৯৫ সাল থেকে এই লভ্যাংশের হার একই রয়েছে। আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। ধন্যবাদ ভাল থাকবেন।